৫২ শতাংশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানকে ঘুষ দিতে হয়

৫২ শতাংশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানকে ঘুষ দিতে হয়

সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সেবা নিতে গিয়ে ৫২ শতাংশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানকে (এসএমই) ঘুষ দিতে হয়। এদের মধ্যে বড় একটি অংশ বাধ্য হয়ে ঘুষ দিয়েছে; বাকিরা মনে করে, ঘুষ দিলে দ্রুত ও ঝামেলা ছাড়া সেবা পাওয়া যায়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের কাছে যাঁরা অভিযোগ জানিয়েছেন, তাঁদের ৭০ শতাংশ প্রতিকার পাননি।

এসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের নিয়ে করা এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। যৌথভাবে জরিপটি করেছে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) ও বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট এন্টারপ্রাইজ (সিআইপিই)। ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে জরিপটি পরিচালিত হয়। এতে দেশের এসএমই খাতের সঙ্গে জড়িত ৮০০ জন অংশ নেন, যাঁদের মধ্যে ৪০০ জন উৎপাদন খাত ও বাকিরা সেবা খাতের সঙ্গে যুক্ত।

জরিপকালে উদ্যোক্তারা বলেন, সরকারি বিভিন্ন পরিষেবা নিতে গিয়ে তাঁদের ঘুষ দিতে হয়েছে। জরিপ অনুসারে, কোনো কোম্পানির নতুন নিবন্ধন নেওয়া ও নবায়নের ক্ষেত্রে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ উদ্যোক্তাকে ঘুষ দিতে হয়। এ ছাড়া উদ্যোক্তাদের মতে, দুর্নীতির অন্য বড় জায়গাগুলো হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের নিবন্ধনসংক্রান্ত অফিস, রাজস্ব দপ্তর, সিটি করপোরেশন, পৌরসভাসহ স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, ভূমি নিবন্ধন কার্যালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

উদ্যোক্তারা বলেন, তাঁরা বিভিন্ন কাজ করতে গিয়ে দেখেছেন, সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে ঘুষ দিলে সময় বাঁচে। এ কারণে প্রায় ৬১ শতাংশ এসএমই উদ্যোক্তা কোনো না কোনো সময়ে সেবা নিতে গিয়ে অনৈতিক পথ বেছে নিয়েছেন। তবে অত্যধিক দুর্নীতির কারণে বাজার আরও অসম হয়ে ওঠে বলে মনে করেন ৭১ শতাংশ উদ্যোক্তা। পাশাপাশি সরকারি কঠোর নিয়মকানুনও অনেক সময় দুর্নীতি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে বলে মত তাঁদের।

দুর্নীতির বিভিন্ন মাধ্যমের কথাও জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। তাঁরা জানান, সরাসরি ঘুষ, চাঁদাবাজি, স্বজনপ্রীতি ও মাত্রাহীন পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে এসব দুর্নীতি হয়। তবে দুর্নীতির অভিযোগকারীর সংখ্যার তুলনায় অভিযোগ প্রদানের হার অনেক কম। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মাত্র ২ দশমিক ৩ শতাংশ কোনো না কোনো পর্যায়ে অভিযোগ দিয়েছেন। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই অভিযোগের প্রতিকার পাননি।